ছোট্ট ছুটিতে পেডং (Pedong- Weekend Gateway)

ছোট্ট ছুটিতে পেডং (Pedong- Weekend Gateway)

ছুটি মাত্র পূজোর ক’দিন। কিন্তু হাতে হরেক রকম কাজ। তাই আগে থেকে ঘোরার প্ল্যান করে ওঠা সম্ভব হয় না সবসময়। আমারও আর হয়ে ওঠেনি সব কাজ শেষে দেখলাম হাতে এখনও তিন চার দিন আছে।কিন্তু যাব কোথায় ? না আছে ট্রেনের টিকিট, না আছে কোনো বুকিং। শিলিগুড়ি থেকে অনেক জায়গা যাওয়া যায় তাই শিলিগুড়ি পৌঁছাতে পারলে কোথাও একটা ঠিক যাওয়া হবে। জলপাইগুড়িতে আমার এক ভাগ্নে থাকে।এম এ করছে। ঠিক করলাম তাকে নিয়েই শিলিগুড়ির কাছে পিঠে কোথাও একটা ঘুরে আসবো।

যেমনি ভাবা ওমনি পরদিনই হলদিবাড়ি ট্রেনে টিকিট কেটে উঠে পরলুম। অসম্ভব বৃষ্টি সেদিন। উল্টাডাঙ্গা থেকে চিৎপুর  যেতেই ভিজে একসা। অসম্ভব বৃষ্টিতে ট্রেনও চলছে ধীর গতিতে। যখন এন জি পি পৌছালাম দেখলাম ট্রেন লেট তিন ঘণ্টা। ভেবেছিলাম পৌঁছে ঘোরার প্ল্যানটা ছকে ফেলবো কিন্তু ঘরে পৌছালাম মাঝ রাতে। তবু আমি পরদিনই ঘুরতে বেরোতে বদ্ধপরিকর। তাই ঠিক হলো আমার ভাগ্নে নুটু আর তার বন্ধু  আমার সাথে যাবে। কিন্তু কোথায় যাব সেটা ঠিক করতে পারলাম না। তাই ভাবলাম জায়গা আমরা রাস্তায় বেরিয়েই ঠিক করবো। অনেক তো প্ল্যান করে ঘুরেছি এবার না হয় একটু অন্য রকম ঘুরি।

আমার ঘুম ভোরবেলায়ই ভেঙ্গে গেছে। নিজেদের ব্যাগপত্তর মোটামোটি গুছিয়ে নিয়ে সকাল সকালই বেরিয়ে পরলাম। ঠিক হলো আগে শিলিগুড়ির বাসে উঠি। তারপর পররবর্তী ধাপ ঠিক করা যাবে। উত্তরবঙ্গ আর সিকিমের অনেকটায় আমার ঘোরা। এবার অন্য কোনো নতুন জায়গায় যেতে চাই। শিলিগুড়িতে এসেই দেখি কালিংপঙ এর বাস দাড়িয়ে আছে। আমি আগেই পরেছিলাম যে কালিংপঙ এর কাছাকাছি অনেকগুলো নতুন স্পট হয়েছে। তাই বেশি না ভেবে উঠে পরলুম কালিংপঙগামী বাসে।  আমি বেশিরভাগই আগে থেকে প্ল্যান করে ঘুরি। কিন্তু এরকম কিচ্ছু ঠিক না করে ঘোরার যে কি অদ্ভুত উন্মাদনা তা বলে বোঝানো যাবে না। আমি বারেবারে এরকমভাবে ঘুরতে চাই। এতে শুধু জায়গাটা চেনাই হয় না লোকাল মানুষের সাথে মেশার সুযোগও হয়।

 হাসি মজায় হইচই করতে করতে পৌছে গেলাম কালিংপং । ।রাস্তা খুব খারাপ। এমনিতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা। কিন্তু রাস্তা খারাপের জন্য সময় একটু  বেশি লাগলো। এদিকে বেলা বেরেছে। কালিংপঙ আমি আগেও এসেছি । এখানে বাঙালী খাবার হোটেলের অভাব নেই। কাছেরই একটা বাঙালী হোটেলে জম্পেশ ভুড়িভোজ হলো। খেয়েদেয়ে আমরা চলে গেলাম লোকাল গাড়ির স্ট্যান্ডে। ওখান থেকে অনেক জায়গার গাড়ী ছাড়ে। পাশেই দেখলাম “পেডং পেডং’’ করে চেঁচাচ্ছে একটা ছেলে। একটু পরই ছাড়বে। পেডং নামটা শুনেছিলাম আগেই কিন্তু যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই উঠে পরলুম সেই গাড়রিতেই। আমাদের এক সদ্য় সহযাত্রীর থেকে পেডং সম্বন্ধে টুকটাক জেনে নিলাম। তার বাড়ি পেডং এই। খুব ভালো মানুষ। নিজে দায়িত্ব নিয়ে আমাদের একটা ভালো হোটেলে পৌঁছে দিলেন।

পেডং একটা ছোট্ট পাহাড়ী জনপদ। যারা প্রকৃতি ভালোবাসে, কিছু মুহূর্ত শহরের ভিড়ভাট্টা থেকে বাইরে  কাটাতে চান, পাইনের জঙ্গল আর পাহাড়ে ঘেরা পেডং তাদের জন্য। দুটো দিন নিরিবিলিতে  পাহাড় আর মেঘের খেলা দেখে, জঙ্গলে নানাধরনের পাখির ডাক শুনে কাটিয়ে দেওয়া যায়। আজকাল সিল্ক রুটের খ্যাতিতে পেডং নামটা অনেকের কাছেই হয়তো পরিচিত। কিন্তু বেশিরভাগই পেডং কে বুড়ি ছোঁয়া করে বেরিয়ে যায় অন্য কোথাও। কিন্তু পেডং সুন্দরিকে জানতে হলে, চিনতে হলে অন্তত একটা পুরোদিন দিতে হবে তাকে।

আমাদের হোটেলের কাছেই ক্রস হিল। বিকেলের রোদ গায়ে মেখে আমরা হাঁটা লাগালাম সেই পথে। ১৮৮২ সালে পাহাড়ের উপর একটি ক্রশ তৈরি করেন ফরাসী প্রিস্ট  অগাস্টিন ডেসগডিন তিব্বতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া মানুষদের স্মরণে। এটি স্থানীয় খ্রিষ্টানদের  কাছে একটি পবিত্র স্থান।  পাহাড়ের চূড়ায় তখন গোধুলীর রক্তিম আভা। আকাশ যেন আবির খেলেছে। চারিদিকে আঁধার নামা শুরু হয়েছে সবে। নিচে পাহাড়ের গায়ে আলো জ্বলে ওঠা শুরু করেছে। সবমিলিয়ে এক অসাধারণ পরিবেশ। সূর্যাস্ত দেখার জন্য পেডং এ এর থেকে ভালো জায়গা নেই। এরপর  সন্ধ্যের আলো  আঁধারী উপভোগ করতে করতে আমরা চললাম পেডং বাজারের পথে। এখান থেকে দু’তিন কিমি পথ হবে খুব জোড়। পাহাড়ে ঝুপ করে আঁধার নামে জানি তবু এমন ঝুপ করে নামবে ভাবিনি কেউ। হুট করে চারপাশে আঁধার নেমে এল। এই রাস্তায় বাড়িঘরও বিশেষ নেই। দুপাশে জঙ্গল। ফাঁকা রাস্তা। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। রাতের নিঝুমতাকে উপভোগ করতে করতে এগিয়ে চলতে থাকলাম আমরা। পেডং বাজারটি ছোট্ট। তবু স্থানীয় মানুষদের এটাই ভরসা। নানারকম খাবার থেকে শুরু করে রোজকার সব জিনিসই পাওয়া যায়। টুকিটাকি কেনাকাটা সেরে আমরা ফিরে এলাম হোটেলে।

রাতের খাবার পর গায়ে চাদরটা চাপিয়ে আমি বারান্দায় গিয়ে বসলাম। রাতের দিকটায় ঠান্ডাটা বেশ ভালোই। দুরের পাহাড়ের গায়ে অসংখ্য আলো তারার মত মিটিমিটি করছে। একটা শিরশিরে হাওয়া বইছে। চারিদিক নিস্তব্ধ । সে এক অদ্ভুদ অনুভূতি। নিস্তব্ধতা যেন কথা বলছে।  দূরে কোন নদী বা ঝোরার কূলকূল আওয়াজ কানে আসছে স্পষ্ট। আস্তে আস্তে পাহাড়ের গায়ের আলো নিভতে লাগলো । আকাশের এক ফালি চাঁদের পাশে মেঘেরা ভিড় করে এল। বাতাসের গতি বাড়তে লাগলো। মনেস্ট্রির ঘন্টার মৃদু  টুংটাং আওয়াজ শুনতে পেলাম। বাতাসের গান , নদীর গান আর ঘন্টার টুংটাং মিলে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল যে মনে  হচ্ছিলো স্বর্গ বলে কিছু যদি থেকে থাকে তবে তা এটাই। এর থেকে সুন্দর আর কিছুই হতে পারে না। কতক্ষণ বসে ছিলাম জানিনা। আমার সব বাহ্যিক  জ্ঞান যেন লোপ পেয়েছিলো। মনের ভিতরটা এক অসীম শান্তিতে ভরে গেছে। আমি আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে  শুধু উপভোগ করেছি মুহূর্তটাকে, উপলব্ধি কতটা করতে পেরেছি জানিনা। তবে ওইরকম মুহূর্ত খুব কমই আসে জীবনে। এগুলো জীবনে চলার পথের অশান্ত মুহূর্তগুলোতে শান্তি ছড়িয়ে দেয়।

পরদিন ভোর বেলা ক্রস হিল দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। আগের রাতে জায়গাটা লেগেছিলো অন্য রকম। আজ লাগলো সম্পূর্ণ আলাদা। আকাশ ঝকঝকে। দুরের পাহাড়ের চূড়া  আলোয় চকচক করছে। দূরে পাহড়ের কোলে ছোট ছোট পাহাড়ি গ্রাম দেখা যাচ্ছে। ক্রশ হিলের কাছেই শহীদ পার্ক। এটি কার্গিলের যুদ্ধে শহিদ হওয়া পেডং এর  এক যোদ্ধার  স্মরণে তৈরী। এরপর আমরা পৌছালাম  পেডং মনেস্ট্রি ও সাঞ্চেন গুম্ফা। এটি পেডং বাজার থেকে দেড় কিমি দূরে অবস্থিত। পেডং মনেস্ট্রিতে সাঞ্চেন মনেস্ট্রির শেষ লামা সাব্দাং রিম্পোচেলার মমি সংরক্ষিত আছে। এর পাশেই সাঞ্চেন গুম্ফা।  এটি একটি প্রাচীনতম মনেস্ট্রি। তৈরি হয় ১৭০৬ সালে।

 

এরপর আমাদের গন্তব্য  সবুজ সুন্দরি সাইলেন্ট ভ্যালী ও তিনচুলে। সাইলেন্ট  ভ্যালী হচ্ছে পাইন বন ঘেরা সুবিশাল সবুজ চারণভূমি যেখান থেকে  পাইন বনের নিস্তব্ধতাকে উপভোগ করা যায় । তিনচুলে অভিযানের অভিজ্ঞতা আবার  অন্যরকম।রামেতে যাবার রাস্তা থেকে ১ কিমি ভেতরে পায়ে হাটা পাথুরে রাস্তা বেঁয়ে পৌঁছতে হয় এখানে। এটি প্রায় ৬০০০ ফিট উঁচু একটি ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে কঞ্চনজঙ্ঘা ঘেরা পাহাড়ের ঢালে সবুজে ঢাকা উপত্যকা, সিকিম শহর , জেলেপ লা ও নাথুলার অসাধারণ view পাওয়া যায়।


 এরপর  আমরা পৌঁছায় সিলারি গাও। এটি ৬০০০ ফিট উচুতে অবস্থিত। এখান থেকে কাঞ্চনজংঘার পুরো রেঞ্জটাই দেখা যায় আকাশ পরিস্কার থাকলে। সিলারি গাঁও এ চা পাণ করে অলস পায়ে আবার চলা শুরু রামেতের পথে। রামেতে সিলারি গাঁও থেকে ৩ কিলোমিটার রাস্তা। তিস্তা যেন কিশোরি মেয়ের মতো পাহাড় আর মেঘের সাথে খেলা করতে করতে এগিয়ে চলেছে সবুজ উপত্যকা দিয়ে। তিস্তার রূপ নয়নভিরাম। তিস্তার প্রায় ১৪ টি  বাঁক একসাথে দেখা যায় এখান থেকে। বসে থাকতেও যেন ভালো লাগে এমন জায়গায়।

এরপর আমরা যাব ঐতিহাসিক ডামসাং  ফোর্টের ধ্বংসাবশেষ দেখতে। সিলেরী গাও এর হোটেলের মালিকের হাতে আঁকা ম্যাপ সম্বল করে শুরু হলো আমাদের ডামসাং ফোর্ট যাত্রা। জনমানবহীন জংগলে ঢাকা পাহাড়ী পায়ে হাটার সরু রাস্তা। কোথাও কোথাও রাস্তা খুঁজে  পাওয়া যায় না। দিনের বেলাও গা ছমছমে পরিবেশ। নানা রকম পাখির ডাক আর ঝিঁঝিঁর আওয়াজ মিলেমিশে একাকার। প্রায় ৪৫ মিনিট  হাঁটার পর দেখা গেল ডামসাং  ফোর্ট। খুবই জীর্ণ অবস্থা। দেখার আর বিশেষ কিছুই অবশিষ্ট নেই এখন। লোকজন খুব একটা আসে বলেও মনে হলো না। এই গোটা পথে একটা লোকও চোখে পরেনি। এটি ১৬৯০ সালে লেপচারা নির্মাণ করে।পরবর্তিতে ১৮৬৪ তে আংলো-ভুটান যুদ্ধের পর ব্রিটিশরা দখল করে নেয়। এই রকম একটা ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ন স্থানের  সংরক্ষণ খুবই দরকার। তবু এখানে আসার জংলি পথটা এতটাই রোমাঞ্চদায়ক ছিলো যে আমাদের এতটা আসার  জন্য কোনো ক্ষেদ ছিলো না। এরপর পাহাড়ী উচুনিচু আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে ফিরে চললাম আমাদের আস্তানায়। পেডং যখন পৌঁছেছি তখন সবে বিকেল নামছে। আকাশ রক্তিম। কচিকাচারা ইস্কুল থেকে ঘরে ফিরছে। তাদের কলকল  আওয়াজে, খেলার মাঠের উল্লাসে গোটা পেডং যেন উৎসব মুখরিত।


 

পরেরদিন সকাল সকাল আমরা বেরিয়ে পরলাম আরিতারের পথে । প্রথমে যাই ঋষিখোলা।   

ঋষিখোলা ঋষি নদির তীরে সিকিম আর পশ্চিমবঙ্গের বর্ডারে অবস্থিত একটি ছোট্ট  লোকালয়।  যদি কিছুটা মুহূর্ত কাটাতে চান প্রকৃতি সাথে একান্তে, তবে ঋষিখোলা আদর্শ স্থান। ঋষি নদীর কলরবে, নাম না জানা পাখীদের কিচিরমিচিরে, পাহাড় আর ঘন সবুজ পাইনের ছায়ায় রিসিখোলা যেন সবার থেকে আলাদা। খরস্রোতা নদীর তীরে পাখির গান শুনতে শুনতে কোথা দিয়ে যে সময় কেটে যায় বোঝা যায় না। এবার আমাদের হাতে বেশি সময় নেই তাই রিসি নদির তীরে জ্যোৎস্না গায়ে মেখে প্রকৃতির সাথে একটা রাত কাটানোর বাসনাটা রেখে দিলুম পরের বারের জন্য। আমরা এগিয়ে চললাম আরিতারের পথে।

আরিতার হলো পূর্ব সিকিমের ৪৬০০ ফিট এ পাহাড়ের কোলে অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রাম। এখানেই আছে জঙ্গল আর পাহাড়ে ঘেরা আরিতার লেক যাকে স্থানীয়রা বলে লমপোখারী। এটি যেন পাখিদের স্বর্গ রাজ্য। এই লেকে বোটিং করার ব্যবস্থাও আছে। সিকিমের এটিই সবচেয়ে উঁচু লেক যেখানে বোটিং করা যায়। শহরের ব্যাস্ত জীবন থেকে অনেক দূরে পাহাড়, জল আর জঙ্গলের এমন মেলবন্ধন মনের মাঝে গভীর ছবি এঁকে দিয়ে যায়।
আরিতার লেক থেকে আমরা পৌছুলুম মানখিম। মানখিম মাইতি গ্রামে অবস্থিত। এখানে ৬৫০০ফিট উচুতে  খুব সুন্দর এক নেপালি মন্দির আছে।  জায়গাটি এত সুন্দর যে মনে এক অদ্ভুদ শান্তি মনকে ভরে দেয়। এখান থেকে সবুজেঘেরা আরিতার লেকটিকে অসাধারণ লাগে।  


এই মন্দিরটিতে আমাদের যিনি নিজের গাড়িতে কোন পয়সা না নিয়েই  নিয়ে আসেন এবং আমাদের নিজের পরিচিত হোটেলে খেতে নিয়ে যান তার কথা এখনে বলতেই হয়। তিনি হচ্ছেন মিঃ তারা। তিনি পেডং থেকে রংলি পর্যন্ত লাইনের ট্রেকার চালান। আমরা পেডং থেকে এখানে পৌঁছনোর পর তিনি দায়িত্ব নিয়ে বাকিটা ঘোরান। এমনকি খাবার পয়সাটাও আমাদের দিতে দিচ্ছিলেন না। সবাই যখন বলে একা একা মহিলাদের ঘুরে বেরানো আজকাল নিরাপদ নয় তখন এসব মানুষদের জন্যই আমরা মনে সাহস পাই বেরোনোর।

আমাদের আজকের যাত্রা প্রায় শেষের পথে। এখান থেকে আমরা রংলি হয়ে ফিরে এলাম পেডং এ। হোটেলে এসে পরিচয় হলো পল এর সাথে। সে সুদুর আমেরিকা থেকে এখানে এসেছে ছুটিতে এখানের এক মিশনারি স্কুলের বাচ্চাদের সাথে সময় কাটাতে। পেডং এ বেশ বড় দুটো মিশনারি স্কুল আছে। পলের থেকে জানলাম পেডং বাজার থেকে ৮কিমি দূরে অবস্থিত কাশ্যায়ণ গ্রামের সম্বন্ধে যেখানে সিঙ্কোনা চাষ হয়। জানলাম লেপচা হেরিটেজ ও  ফ্রাঙ্কো সুইস মিউজিয়াম সম্বন্ধে।

পরদিন আমাদের ঘরে ফেরার পালা। তার আগে আমরা হেরিটেজ মিউজিয়াম ঘুরে নিলাম। মিউজিয়ামের বাড়িটি ১৬০০ সালে তৈরী। ৩০০ বছরের প্রাচীন লেপচাদের জীবনযাত্রার কৌশল নিয়ে জানতে হলে আসতে হবে এখানে।  

এই কদিনেই পেডং যেন নিজের হয়ে গেছিলো। লোকাল মানুষজনের আন্তরিকতায়, সাহায্যে আমাদের মন ভরে গেছিলো। তাই আবার পেডং যাবার ইচ্ছে নিয়ে ফিরে চললাম ঘরের পথে।

এক নজরেঃ

কিভাবে যাবেন –

 কলকাতা থেকে ট্রেনে এন জে পি। এন জে পি থেকে কালিংপং হয়ে সরাসরি গাড়ি নিয়ে আসতে পারেন, সময় লাগে ৩ ঘণ্টা(প্রায়)। শিলিগুড়ি থেকে পেডং এর দূরত্ব প্রায় ১০০ কিমি।এছাড়া শিলিগুড়ি থেকে বাস চলে কালিংপং পর্যন্ত। সময় লাগে ৩ ঘন্টা। কালিংপং থেকে আবার ট্রেকার চলে পেডং পর্যন্ত। এই পথ ২২ কিমি মতো। সময় লাগে ১ ঘন্টা ।

কোথায় থাকবেন –

 ডামসাং গেস্ট হাউস (ফোঃ : 9933615828, 9933390727, 03552-281212 & 94342-48158)

পেডং হলিডে রিসোর্ট (ফোঃ : 9932758187, 9932516125 ,  03552-281275 / 281218.)

ক্রশ হিল গেস্ট হাউস (ফোঃ 9932775401)

ডামডি লজ ফোঃ (03552-281418.)

কি কি দেখবেন –

ক্রশ হিল

পেডং মনেস্তরি ও সাঞচেন গুম্ফা

ডামসাং ফোর্ট

সাইলেন্ট ভ্যালী

তিনচূলে ভিউ পয়েন্ট

পেডং বাজার

সিলারী গাও

রামেতে

ফ্রাঙ্কো সুইস মিউজিয়াম

যেতে পারেন রিসিখোলা, আরিতার, সিল্ক রুট

Moon Ray

A traveller with soul of a Nomad

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.